শিক্ষার্থী জোগাড় করতে এই প্রতিযোগিতা শুরু করেছে কোচিং সেন্টারগুলো। বুঝিয়ে শুনিয়ে অভিভাবকদের মন জয় করতে পারলেই জুটে যাচ্ছে শিক্ষার্থী।
শিক্ষকরা স্বল্প বেতনে পড়ানোর প্রলোভন দেখান বলে কয়েক জন অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়।
পীরগঞ্জ পৌরশহর ঘুরে দেখা যায়, ছোট শহরটিতে প্রায় অর্ধশতাধিক কোচিং সেন্টার গড়ে উঠেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামনে বড় বড় ডিজিটাল ব্যানার-ফেস্টুন টানিয়ে নিজেদের প্রচারণা চালাচ্ছে এইসব কোচিং সেন্টার।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এইসব কোচিং সেন্টারের সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন।
এ বিষয়ে অভিভাবকরা বলছেন, স্কুলগুলোতে ভালো পড়ানো হয় না। এজন্যই ভালো রেজাল্ট করানোর লক্ষ্যে বছরের প্রথম থেকেই সন্তানদের কোচিং সেন্টারে ভর্তি করাচ্ছেন।
এক অভিভাবক বলেন, "বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কোচিংয়ের সাথে জড়িত। কোচিং হোমে একই শিক্ষক ভালোভাবে পড়ান কিন্তু স্কুলে ঠিকমতো ক্লাস নেন না।"
এজন্য একরকম বাধ্য হয়েই সন্তানকে কোচিংয়ে দিতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।
আরেক অভিভাবক বলেন, "ইতিমধ্যে তার সন্তানকে কোচিংয়ে ভর্তি করার জন্য অনেক শিক্ষক বাড়িতে গিয়েছেন। অনেকে আবার কম বেতনে পড়ানোর প্রস্তাব করছেন।"
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলে, "ডিসেম্বরে বার্ষিক পরীক্ষা দিয়ে কয়েকদিন খেলাধুলা করেছি। এখন আবার কোচিং আর স্কুল। খেলার ইচ্ছে করলেও সময় নেই।"
আরেক শিশু বলে, "বাবা-মায়েরা শুধু ভালো রেজাল্ট চা। আমার যে পড়ালেখার ফাঁকে খেলতে মন চায়, সেটা তারা একবারও বোঝার চেষ্টা করেন না।"
কোচিং সেন্টার সংশ্লিষ্ট কয়েক জন শিক্ষকের সঙ্গে কথা হলে তারা হ্যালোকে বলেন, "স্কুলের পাশাপাশি কোচিংয়ে পড়াশোনা করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে। এজন্য স্কুল শেষে তারা শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছেন।"
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন, "কোচিং সেন্টারের বেড়াজাল থেকে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বের করে আনতে হবে। এজন্য কঠোর আইন করা জরুরি।"
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, "ইতিমধ্যে দুই বার কোচিং সেন্টার সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের সাথে মিটিং করা হয়েছে। স্কুলের সময়ে কোনো কোচিং সেন্টারে শিক্ষার্থীরা পড়তে পারবে না। যদি কোনো কোচিং সেন্টার পড়ায় তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"