সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর গিলাবাড়ী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের এই দোকানটি শনিবারে চালু করা হয়েছে।
দোকানির পরিবর্তে একটি কাগজে পণ্যের মূল্যতালিকা লিখে তা পন্যের ঝুড়িতে লাগানো আছে। প্রয়োজনীয় পণ্যটি সংগ্রহের পর তা নিজ দায়িত্বেই দাম পরিশোধ করে শিশুরা।
খাতা, কলম, পেনসিল, রাবার, স্কেল, পেনসিল কাটার, বিস্কুট রেখে প্রত্যেক ঝুড়িতে পণ্যের দাম লিখে দেওয়া রয়েছে। সেখানে একটা কৌটা রাখা। শিশুরা আসছে, যে যার দরকারমতো ঝুড়ি থেকে খাতা, কলম, পেনসিল বা রাবার, জ্যামিতি বক্স, বিস্কুটসহ প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে কাগজে লেখা দাম দেখে ওই কৌটার মধ্যে নির্দিষ্ট টাকা রেখে যাচ্ছে।
বলা হচ্ছে, এটা কোনো দোকান নয়, এটা শিশুদের সততা চর্চার একটা কেন্দ্র।
স্কুলের শিক্ষক ও দোকানটির দেখভালকারী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘২০১৬ সালের ২২ অগাস্ট প্রধান শিক্ষক আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থী-শিক্ষক-অভিভাবকদের নিয়ে একটা সভা করেন। সেখানে তিনি শিশুদের মধ্যে সততার বোধ জাগানোর জন্য ‘গুডনেস সপ’ নামের এই দোকান চালুর ঘোষণা দেন। ওই দিনই খাতা, কলম, পেনসিল, রাবার, স্কেল, পেনসিল কাটার, বিস্কুট আনিয়ে দোকানটি চালু করা হয়।
এই দোকানে কেনা দামেই সব জিনিস বিক্রির দাম ঠিক করা হয়। কোনো লাভ করা হয় না।
স্কেল কিনতে আসা ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রি লিয়া বলে, ‘বাইরের দোকান থেকে এ দোকানে দাম কম। তা ছাড়া কেউ টাকা চাচ্ছে না, আমি নিজেই টাকা দিয়ে চলে যাচ্ছি। এ জন্য আমার খুব মজা লাগে।’
যদি টাকা না থাকে তাহলে শিক্ষকদের কাছ থেকে ধার নিয়ে খাবার কেনার সুযোগ আছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান-ই-হাবিব বলেন, ‘এই দোকানের মাধ্যমে শিশুদের সততা ও সত্যবাদিতা শেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করছি, এটা ভবিষ্যতে তাদের আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে ভূমিকা রাখবে।
‘মূলত শিক্ষার্থীদের লোভ সংবরণ, সৎ, আদর্শ, দেশপ্রেমিক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে এই দোকানটি খোলা হয়েছে।
মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সোহাগ বলেন, ‘এই ধরনের মহতী ও ব্যতিক্রমী উদ্যোগের ফলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিকতা তৈরি হচ্ছে।’
জেলা শিক্ষা অফিসার মো. শাহিন আক্তার জানান, এই ধরনের চিন্তা-চেতনা শিশু শিক্ষার্থীদের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।