সম্প্রতি রাজধানীর মিরপুর একের আনছার ক্যাম্পের একটি ময়লার স্তুপে কাজ করার সময় হ্যালোর সঙ্গে কথা হয় কয়েক জন শিশু শ্রমজীবীর।
তাদের মধ্যে একজনের নাম তুহিন। ওর বাবা মো. বাবুল একজন রাজমিস্ত্রি এবং মা কুলসুম অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে। ওরা তিন ভাই ও এক বোন।
১০ বছর বয়সী তুহিন পড়াশোনা করে না। পড়ে না কেন জানতে চাইলে ও বলে, "আগে পড়তাম, এখন আর পড়ি না।"
সারাদিন কাজ করে বেতন কত পায় সে খবর জানা নেই তুহিনের। বেতনের কথা জানতে চাইলে ও বলে, "বেতন তো আব্বা নেয়।"
এই গন্ধে কাজ করতে খারাপ লাগে কিনা জানতে চাইলে কথা না বলে কাজে মনোযোগ দেয় তুহিন।
তুহিনের পাশেই কাজ করছেন রুবেল নামের আর একজন। উনার বয়স ২০। তবে তিনি শিশু শ্রমজীবী হিসেবেই কাজ শুরু করেছিলেন। ছয় বছর বয়স থেকে এ কাজ করছেন।
তিনি বলেন, "এখন ঘোষণা এসেছে বিকেল ৩টা থেকে সারারাত কাজ করতে হবে।"
রুবেল মাসে পাঁচ হাজার টাকা বেতন পান। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করলেও আর আগাতে পারেননি।
তিনি বললেন, আবারও পড়ালেখায় ফিরতে চান। কিন্তু সেরকম কোনো সুযোগ পাচ্ছেন না।
ময়লা নিয়ে কাজ করায় অনেক সময় অনেক শিশু শ্রমজীবী অসুস্থ হয়ে পড়ে বলে জানান তিনি। তবুও পেটের দায়ে কাজ করতে হয় বলে দুঃখ প্রকাশ করেন রুবেল।
আনছার ক্যাম্পের আবর্জনার স্তুপ ছাড়িয়ে মিরপুর এক নম্বরের বাস স্ট্যান্ডের দিকে যেতে ফুটপাথে দেখা হয় কয়েক জন টোকাই শিশুর সঙ্গে।
এ দলের একজন হলো মান্না। সারাদিন রাস্তায় কাগজ, বোতল কুড়িয়ে তা বিক্রি করে জীবন চালায়। তার দৈনিক আয় প্রায় দুইশ থেকে তিনশ টাকা।
তারা দুই ভাই। বাবা পেশায় গাড়িচালক। বড় ভাই গার্মেন্টসে কাজ করেন। দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্তই তার লেখাপড়া। এর পর বাড়ি থেকে আর পড়ানো হয়নি ওকে। নিজেও আর আগ্রহ করে স্কুলে যায়নি বলে জানায় ও। তবে সুযোগ পেলে এখন স্কুলে যেতে চায়।
মিরপুর-জিগাতলা রুটে গণপরিবহণের হেল্পারের কাজ করে হৃদয়। ও চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। তারা পাঁচ ভাই বোন। বাবা কোনো কাজ করে না বলে লেখাপড়া ছেড়ে ওকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে।