মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলায় তাকে নয় বছর ধরে একটি ঘরে বন্দি করে রাখা হয়েছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাতে শেকল বাঁধা অবস্থায় কাঠের একটি চৌকিতে বসে আছেন সাবিহা।
তার মা আলেয়া বেগম জানান, বিয়ের তিন মাস পরই পারিবারিক কলহের কারণে স্বামীর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তার মেয়ে। এরপর তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। বাবার বাড়িতে আসার পর কয়েক মাস পর সাবিহা এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। এরপরও কোন খবর রাখেননি স্বামী মিজানুর রহমান। গরিব মা বাবার পরিবারেই নতুন জীবন শুরু হয় মা ছেলের।
তার মা বাবা দু'জনই দিনমজুরের কাজ করতেন। কিন্তু হঠাৎ করেই বাবা ইমাম উদ্দিন মারা গেলে অন্ধকার নামে মা মেয়ের জীবনে। এখন ৬৯ বছর বয়সী বৃদ্ধ মা কখনো অন্যের ক্ষেতে আবার কখনো অন্যের বাড়িতে কাজ করে মেয়ে ও নাতির খরচ জোগান দিয়ে আসছেন। তার সাথে চলছে মেয়ের চিকিৎসা। তবুও সুস্থতার লক্ষণ নেই।
তিনি বলেন, "বেঁধে না রাখলে মেয়ে অন্যের বাড়িতে গিয়ে ভাংচুর করে। মানুষকে ইট ছুঁড়ে মারে। আমাকে অনেক সময় মারধর করে। এজন্যই বন্দি করে রাখা হয়েছে।"
সাবিহার ছেলে মাখদুম রহমান এখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে।
মাখদুম বলে, বাবা তার কোনো খোঁজ নেয় না। নানী খুব কষ্ট করে ওকে পড়ান।
"মাকে যদি ভালো ডাক্তার দেখানো যেত তাহলে মা সুস্থ হয়ে যেত। কিন্তু টাকার জন্যে সেটা করা সম্ভব হচ্ছে না।"
এছাড়া মাখদুম সব সময় ভয়ে থাকে। জানায়, টাকার অভাবে লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় পায় ও।