নওগাঁ শিশু পরিবারে অনেক 'অভাব'

পর্যাপ্ত লোকবলের অভাবে খুঁড়িয়ে চলছে নওগাঁর সরকারি বালিকা শিশু পরিবার।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, এই শিশু পরিবারে একশ' জন শিশু রয়েছে। আর এদের দেখভালের জন্য ১৯ জন লোক থাকার কথা থাকলেও রয়েছে ১০ জন।

লোকের ঘাটতি থাকায় সব কাজ সামলাতে হিমশিম খেতে হয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

শিশু পরিবারের প্রধান গেটে নেই কোনো নিরাপত্তারক্ষী। তবে রাতে একজন নৈশ প্রহরী থাকেন বলে জানা যায়। দিনের বেলা সহজেই যে কেউ ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে।

শিশু পরিবার অফিস সূত্রে  জানা যায়, সার্বক্ষণিক দারোয়ানের পদ ছাড়াও শূন্য রয়েছে উপ-তত্ত্বাবধায়ক ও কম্পাউন্ডারের পদ। এছাড়াও চতুর্থ শ্রেণির পাঁচটি পদের বিপরীতে রয়েছেন মাত্র দুই জন।

এদিকে কারিগরি প্রশিক্ষকের মোট দুইটি পদের দু'জন শিক্ষকই প্রেষণে অন্য জায়গায় কর্মরত আছেন। ফলে এখানে কর্মমুখী শিক্ষার কোনো সুযোগই নেই। অথচ শিশু পরিবার কর্মসূচির অন্যতম নীতি হল মূলধারার শিক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মমুখী শিক্ষার মাধ্যমে অনাথ শিশুদের স্বনির্ভর করে তোলা। শিক্ষক না থাকায় শিশু পরিবারের পাঁচটি কম্পিউটারই অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে গেছে।

শিশু পরিবারের সহকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলাম জানান, ওদের পড়ানোর ফাঁকে সময় পেলে কম্পিউটার  শেখাতেন তিনি। কিন্তু নষ্ট হওয়ায় সেটা আর সম্ভব হচ্ছে না।

চিকিৎসার ক্ষেত্রেও এই পরিবারের বাসিন্দারা অবহেলিত হচ্ছে দিনের পর দিন। খণ্ডকালীন একজন চিকিৎসক থাকলেও সেটা পর্যাপ্ত নয় বলেও অভিযোগ করেন সংশ্লিষ্টরা।

এতো অবহেলা থাকলেও শিশু পরিবারের শিশুদের এসব বিষয়ে কোনো অভিযোগ নেই।

হ্যালোর সঙ্গে কথা হয় অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী জাকিয়া, তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী শিমু, বন্যা ও আরিফার সঙ্গে। এতো সমস্যার মাঝেও তারা হাসি মুখে জানায়, তারা বেশ ভালো আছে।

চিকিৎসা, খাওয়া দাওয়া এমনকি বিনোদনের ব্যাপারেও তাদের কোনো অভিযোগ নেই।

লোকবলের সংকট থাকায় প্রতিষ্ঠানটি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারছেন না বলে হ্যালোকে জানান জেলা সমাজসেবা অফিসার ও শিশু পরিবারের তত্ত্বাবধায়ক মাহবুবুল আলম।

শিশু পরিবারটিতে একজনের দায়িত্ব আরেকজনকে পালন করতে হচ্ছে বলে কোনো কাজই ঠিকমতো হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, "অফিস সহকারী যখন কম্পাউন্ডারের দায়িত্ব পালন করছে তখন স্বাভাবিকভাবেই কাজটা ঠিক মতো হবে না। কম্পাউন্ডার রোগ-বালাই সম্পর্কে কিছু হলেও জানে কিন্তু সহকারী তা জানে না।"

তিনি আরও বলেন, "লোকবল সংকটের বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হয়েছে। তবে তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি।"

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com