সিলেট কাজিরবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও মৎস্য বাজারে কাজ করছে কয়েকশ শিশু।
Published : 06 Apr 2016, 02:34 PM
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে খুব ব্যস্ত সময় পার করছে শিশুরা। এদের বয়স আট থেকে ১৫ বছরের মধ্যে। কেউ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ট্রলারের ভেতর থেকে মাছ তুলছে। আবার কেউ সেই মাছের দর হাঁকাচ্ছে বিক্রির উদ্দেশে।
জানা যায়, এদের কেউই স্কুলে যায় না।
মাছের বাজারে হ্যালোর সঙ্গে কথা হয় বেশ ক’জন শিশু শ্রমিকের।
কাজিরবাজার ‘জসিম মিয়া ’ মৎস্য আড়তে তিন বছর ধরে কাজ করছে রাজু। ওর বয়স ১২ বছর।
রাজু জানায়, সে আরো তিন বছর আগে থেকে কাজ করছে। মা বাবা ভাই বোনসহ সাত জনের পরিবার। বাবা থেকেও না থাকার মতো। মা এ বাড়ি ও বাড়ি ঝিয়ের কাজ করেন। তাতে সংসার চলে না।
এই মাছ বাজার থেকে রাজু যা রোজগার করে তা দিয়ে চলে তার সংসার। প্রথমে ও মাছ টোকাতো, এখন সে পুরোমাত্রায় একজন দক্ষ শ্রমিক।
ও বলে, "ইচ্ছে তো হয় ধনীদের ছেলেমেয়ের মতো পড়ালেখা শিখে অনেক বড় হই। কিন্তু সংসার চালাইবো কে?”
ওর সঙ্গে কাজ করে সোহেল (১৩)। ও সিলেটের একটি বস্তিতে থাকে। তার জন্মের চার মাস আগে বাবা মারা যায়।
প্রতিদিন রাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মাছের ট্রাক আসে। আর সেখান থেকে মাছ নামাতে হয় সোহেলকে। উপার্জিত টাকা দিয়েই চলে সংসার।
সোহেল হ্যালোকে বলে, "বাপ মইরা গেছে হেই ছোডকালে, এহন ঘরের দায় দায়িত্ব সবই তো আমার। কাম করমু না খামু কি।”
‘ছাদনাম’ মৎস্য আড়তের মালিক জসিম মিয়া।
হ্যালোর সঙ্গে কথা হয় তার।
তিনি বলেন, “এই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে প্রায় একশ থেকে দেড়শ জন শিশু কাজ করে। প্রত্যেকের বয়স ১০ থেকে ১৫ বছর।”
আরো বলেন, "আমরা সাধারণত শিশুদের কাজে নিতে চাই না। কিন্তু কি করবো বলেন, এমন ভাবে এসে ধরে যে কাজ না দিয়ে উপায় থাকে না। এমনে তো ঘোরা ফেরাই করবে।"
শুধু ট্রাক থেকে মাছ নামানো নয়। সুরমা নদী থেকে পানি নিয়ে মাছে পানি সরবরাহ করা, মাছের ঝুড়ি ট্রাক থেকে নামানো বা ট্রাকে তোলা সব কাজই করতে হয় তাদের।