উনি যেহেতু আগ্রহ করে শুনাতে চেয়েছেন তাই আমরা আর না করলাম না।
উনি গান শুরু করলেন-
"আমি একটা হাওয়ার গাড়ি/
হাওয়াতে চলি/
হাওয়া যদি বের হয়ে যায়/
চলবে না আর গাড়ি।"
তার নাম মন্টু ফকির। উনার গান শুনে ভালোই লাগল। তারপর কিছুক্ষণ কথা হল উনার সাথে।
হ্যালো: গ্রামের বাড়ি কোথায় আপনার?
মন্টু: পাবনায়। তয় সব জায়গা জমি, বাড়ি এখন নদীতে গেছে গা।
হ্যালো: এখন থাকেন কোথায়?
মন্টু: কামরাঙ্গিচরে, ঢাকায় আসছি ১৮দিন হইছে।
হ্যালো: গান লেখেন কবে থেকে?
মন্টু: প্রায় ২০০৩ সাল থেকে।
হ্যালো: আপনার গানের সংখ্যা কত?
মন্টু: ২০০ টার উপরে। সব ডায়রিতে লেইখা রাখছি।
হ্যালো: লিখে রেখেছেন? আপনি কতদূর লেখাপড়া করেছেন?
মন্টু: ঠিক মনে নাই। ১৪ বছর বয়স থেকে এক বাড়িতে কাম করতাম। ঐ বাড়ির ছোট ছেলের কাছ থেকেও কিছু লেখাপড়া শিখছি। তয় নিজে পড়তে না পারলেও কাম কইরা বড় ভাইরে পড়ালেখা করাইছি।
হ্যালো: বড় ভাইকে কতদূর পড়িয়েছেন? উনি এখন কি করেন?
মন্টু: আইএ (এইচ এস সি) পর্যন্ত। এখন চিটাগাং বন্দরে কাম করে।
হ্যালো: আপনার ছেলেমেয়ে কয়জন? ওরা পড়াশুনা করে তো?
মন্টু: দুইজন। দুইজনই স্কুলে যায়।
হ্যালো: প্রতিদিন কয়টা গান লিখেন?
মন্টু: ঠিক নাই, যে কটা মনে আসে।
হ্যালো: আপনি কি ধরণের গান লিখেন?
মন্টু: দেশাত্বকবোধক, মা-বাবা নিয়ে, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু যখন যেটা মনে আসে। যখন গান লিখি তখন কল্পনা করে লিখি।
হ্যালো: গান লেখার প্রেরণা পেলেন কোথায় থেকে?
মন্টু: নিজ থেকে। ছোট থেকে ইচ্ছা গায়ক হব।
হ্যালো: আচ্ছা বর্তমানে অনেকে বাংলা গান তেমন শুনে না বললেই চলে। এ ব্যাপারে আপনার মত কি?
মন্টু: দেখেন আমরা বাঙালি। বাংলা আমাদের শিকড়। তাই আমাদের বাংলা গানকে ভুইলা থাকা যাবে না। কারণ বাংলায় আমরা বাইড়া উঠছি।
হ্যালো: বর্তমান ইচ্ছে কি?
মন্টু: বর্তমান ইচ্ছে শিল্পী হওয়া। কেউ সুযোগ করে দিলে শিল্পী হইতে চাই। আমার স্বপ্ন বড় গায়ক হব। বাজারে আমার সিডি
বাইর হইব।
হ্যালো: আপনার সাথে কথা বলে ভালো লাগল। আশা করি আপনার ইচ্ছা পূরণ হবে।
মন্টু: দোয়া কইরেন।
তারপর আবারো গুন গুন করতে করতে রিকশা নিয়ে চলে গেলেন মন্টু ফকির।