‘গরিব গো জন্যি স্কুল নাই’

প্রতিদিনই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় দেখতে পাই রাস্তার পাশে একটি ছেলে বাদাম বিক্রি করে। মাঝে মাঝে আমি ওর কাছ থেকে বাদাম কিনি। ছেলেটির নাম জামিল, এক বিকেলে কথা হলো ওর সাথে।

হ্যালোঃ কেমন আছো? তোমার নাম কি?

জামিলঃ আমার নাম জামিল। ভালাই আছি।

হ্যালোঃ তোমাকে প্রতিদিন দেখি এখানে বাদাম বিক্রি করো তাই আজকে তোমার সাথে কথা বলতে আসলাম।

জামিলঃ জ্বি কন, কি কইবেন?

হ্যালোঃ তুমি কি স্কুলে যাও?

জামিলঃ  না, সকালে তরকারির বাজারে কাম করি আর বিকালে বাদাম বেচি। স্কুলে যামু কহন?

হ্যালোঃ তোমার পড়ালেখা করতে ইচ্ছে করে না?

জামিলঃ হ ইচ্ছা তো করে কিন্তু পেটের দায়ে সারাদিন কাম করি পড়ালেখার সুযোগ পাই না।

হ্যালোঃ তোমার বাসায় কে কে আছে?

জামিলঃ আমার আম্মা, একটা বইন আরেকটা ভাই আছে। আব্বা নাই, তিন বছর আগেই মারা গেছে। মায় একটা হোটেলে কাম করে। বইনে আরেকজনের বাসায় কাম করে। আর ভাইয়ে বাসের হেলপারির কাম করে।

হ্যালোঃ প্রতিদিন কত টাকার মতো আয় হয়?

জামিলঃ সব দিন সমান না। কোনদিন বেশি বেচা হইলে লাভ বেশি থাকে, নাইলে কম থাকে। ১০০ টাকার মত লাভ থাকে দিনে।

হ্যালোঃ রোজগারের টাকা কি করো?

জামিলঃ আম্মার হাতেই প্রতিদিনই টাকা দেই। ঘর ভাড়া, বাজারের সব কাম তো আম্মাই করে। আমার খালি চালানের টাকা থাকলেই হইলো।

হ্যালোঃ তোমার মত ছেলে-মেয়েরা যখন রোজ স্কুলে যায় তখন তাদেরকে দেখে তোমার খারাপ লাগে না?

জামিলঃ হ, খারাপ তো লাগেই। আব্বায় না মইরা গেলে আমারে পড়াইতো। আব্বা কইছিলো আমারে ডাক্তার বানাইবো। কিন্তু আমাগো গরিব গো জন্যি স্কুল নাই।

হ্যালোঃ বড় হয়ে কি হইতে চাও?

জামিলঃ বড় হইয়া ব্যবসায়ী হমু। একটা বাড়ি করুম, আম্মারে আর বইনেরে মানুষের বাড়িত কাম করতে দিমু না। আর একটা স্কুল করমু গরিবগো লেইগ্যা, ওইহানে সব গরিবের পোলাপানগো বিনা টাকায় পড়ামু। জানি না এইসব করতে পারমু কি না!

হ্যালোঃ ইচ্ছা থাকলে অবশ্যই করতে পারবে।

জামিলঃ দোয়া কইরেন।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com