'পাখি দেখতে প্রথম পাহাড়ে' (প্রথম পর্ব)

এভারেস্ট জয়ী বাংলাদেশী, এম এ মুহিত সম্প্রতি হ্যালোর মুখোমুখি হয়েছিলেন। পাহাড়ের রোমাঞ্চকর স্বাদ ভাগাভাগির পাশাপাশি নিজের স্বপ্ন নিয়ে কথা হয় হ্যালোর সঙ্গে।
'পাখি দেখতে প্রথম পাহাড়ে' (প্রথম পর্ব)

হ্যালোঃ কেমন আছেন?

এম এ মুহিতঃ আমি ভালো আছি। আপনি?

হ্যালোঃ আমিও ভালো। প্রথমেই আপনার ছোটবেলায় যেতে চাই। কোথায় কেটেছে?

এম এ মুহিতঃ আমার জন্ম ভোলায় কিন্তু বাবার চাকরির জন্য পুরান ঢাকায় বড় হয়েছি। আজ অব্দি এখানেই আছি।

হ্যালোঃ ঢাকায় তো পাহাড়-পর্বত নেই। তাহলে পর্বতারোহী হওয়ার ঝোঁকটা কোথা থেকে এলো।

এম এ মুহিত: আমার জন্মটা জিরো মিটারে অর্থাৎ সমুদ্র সমতলে। সাগরের কূল ঘেষে। আমরা স্কুল ফাইনাল পরীক্ষার পর গ্রামের বাড়িতে যেতাম। ছোটবেলা থেকেই প্রকৃতির প্রতি আমার দুর্বলতা ছিল।

আমরা লঞ্চে করে গ্রামে যেতাম। আমি রাতের বেলা লঞ্চের বারান্দায় গিয়ে চাঁদ দেখতাম, জেলে নৌকা দেখতাম, পানি দেখতাম।

আমার দাদা-নানা বাড়ির মাঝখানে একটা খাল ছিল। এখানে খেয়া পারাপার করতো একটা ছেলে। আমি নৌকা চালানো উপভোগ করতাম। তাই ওকে উঠিয়ে দিয়ে আমি খেয়া পারাপার করতাম।

গাছে চড়া একটা শখ ছিল আমার, বিশেষ করে ডাব গাছ। ডাব আমার খুব পছন্দের। ডাব গাছে উঠতাম। গাছের শক্ত বাকলে আমার বুক ও পেটে আঁচড় লেগে ছড়ে যেত।

ছোটবেলা থেকে সবসময় খেলাধুলা করতাম, মাঠে পড়ে থাকতাম। বৃষ্টিতে ভিজে রোদে গা শুকিয়ে যেত। আজ অব্দি কখনও অসুখ বিসুখ হয়নি আমার। মানে প্রকৃতির সাথে ডানপিটে শৈশব কেটেছে। এটাই বোধ হয় প্লাস পয়েন্ট ছিল।

হ্যালো: 'পাহাড়ে উঠব' এটা কেন মনে হল?

এম এ মুহিত: পাখি পছন্দ করতাম খুব। পাখির রঙ, অবয়ব, কণ্ঠ, সুরে পাগল হতাম। আমাদের দেশে পাহাড়ি এলাকায় বিশেষ কিছু পাখি থাকে যা সমতলে দেখা যায় না। এই পাখি দেখতে গিয়ে পাহাড়ে উঠা।

হ্যালো: প্রথম পাহাড়ে ‍উঠা কবে?

এম এ মুহিত: ১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রোজার ঈদের ছুটিতে আমরা ১২ বন্ধু যাই সিলেটে। তখন মৌলভীবাজার জেলার মাধবকুণ্ড ঝর্ণার দু'শ ফুট উপরে যেখান থেকে পানি গড়িয়ে পড়ে, সেখানে উঠে আমরা সবাই বেশ রোমাঞ্চিত হই। সেটি ছিল আমার জীবনে প্রথম কোনো পাহাড় বেয়ে উঠা।

হ্যালো: এভারেস্ট বিজয়ের পর হয়তো আপনাকে চিনি আমরা। এর আগে ছোট অর্জন বা আরো কোনো পাহাড়ে উঠা হয়েছে কি না?

এম এ মুহিত: আমি থেমে থাকি না। প্রতি বছরই কোনো না কোনো অভিযানে যাই। ২০০৭ সাল থেকে আমি প্রতি বছরেই দু’বার করে হিমালয়ে যাচ্ছি পর্বতারোহণের জন্য। ২০০৯ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর দলনেতা হিসেবে নেপাল-তিব্বত সীমান্তে অবস্থিত বিশ্বের ষষ্ঠ উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ ‘চো ইয়ো’ জয় করি। যা ছিল কোনো বাংলাদেশি পর্বতারোহীর প্রথম আট হাজার মিটারের কোনো পর্বতশৃঙ্গ জয়। বাংলাদেশের পর্বতারোহীদের মধ্যে সর্বাধিক ১৭টি পর্বতাভিযানে অংশগ্রহণ করেছি। (চলবে..)

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com