শৈশব বিসর্জন দিয়েছি

ভালো কোথাও পড়ার সুযোগ পেতে হলে জিপিএ-পাঁচ এর কোন বিকল্প নেই। এ কথা অস্বীকার করা যাবে না। তবুও অনেককে দেখি 'জিপিএ-পাঁচ সংস্কৃতি'র বিরুদ্ধে কথা বলেন।

এর বিরুদ্ধে কথা বলা হয়তো উচিত না। কারণ আমাদের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাই এখন জিপিএ-পাঁচ নির্ভর।

অনেক বড় ভাইয়া আপুকে দেখেছি জিপিএ-পাঁচ না পাওয়ায় বুয়েটে পরীক্ষা দিতে পারেননি। অল্পের জন্য ছিটকে পড়েছেন নিজের স্বপ্নের পথ থেকে।

আমার পাড়ায় এক বড় ভাই আছেন। তিনি এবার মেডিকেল কোচিং করছিলেন। কিন্তু রেজাল্ট বের হওয়ার পর দেখলেন মেডিকেলে ভর্তির জন্য তার যথেষ্ট নম্বর নাই।

ছোটকাল থেকেই তিনি চিকিৎসক হতে চাইতেন। শুধুমাত্র জিপিএ-পাঁচ না পাওয়ার জন্য ছিটকে গেছেন নিজের লক্ষ্য থেকে।

তাহলে জিপিএ-পাঁচ, বেশি পড়ালেখা, বেশি পরীক্ষার বিরুদ্ধে কথা বলে লাভ কী? আগে তো এই ভালো রেজাল্টের ভিত্তিতে ভর্তি প্রথা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। তারপর এর বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে।

অনেকে বলেন এতো পরীক্ষা বাচ্চাদের শৈশব নষ্ট করে দেয়, মানসিক বিকাশে বাধা দেয়। আরও অনেক কিছু।

তাহলে এখন কথা হল আমাদের এখন কী করা উচিত? ভালো রেজাল্টের জন্য শৈশব বিসর্জন দেওয়া উচিত নাকি শৈশবের জন্য ভালো রেজাল্ট বিসর্জন দেওয়া উচিত। কিছুই বুঝে উঠতে পারিনা।

তাই তো জিপিএ-পাঁচ পাওয়ার লক্ষ্যেই পড়াশোনা করতে হয়। প্রায়ই বাবা-মার মুখে শুনতে হয় ঠিকমতো পড়াশোনা না করলে জিপিএ- পাঁচ পাবো না। আর জিপিএ-পাঁচ ছাড়া কোথাও ভর্তি হতে পারব না।

মা বাবার কথা মতো তাই ছুটে চলেছি ভালো ফলাফলের পেছনে। বিসর্জন দিয়েছি শৈশবকে। শুধু কী আমি? আমার মতো হাজারো আরিফের একই দশা।

যারা লেখাপড়ার বোঝা বাচ্চাদের শেষ করে ফেলল বলে খুব বড় বড় বুলি আওড়ান তাদের বলি আগে এই পদ্ধতিটা বদলান। তারপর না হয় এর বিরুদ্ধে কথা বলবেন।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com