স্বপ্নের পথে হাঁটুক ওরা   

আমাদের প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু স্বপ্ন আছে। ছোটবেলা থেকে আমরা যা দেখি, ভালো মনে হয় সেটাই করতে চাই। নতুন নতুন আগ্রহ তৈরি হয়।

আমি ছোটকালে ভাবতাম ডাক্তার হবো। আবার কখনও ভেবেছি ইঞ্জিনিয়ার হবো। আমার বাবা আইনজীবী। কখনও তাকে দেখে ভেবেছি আইনজীবী হবো। হঠাৎ করেই আবার মনে হয়েছে আমি সাংবাদিক হতে চাই।

যখন আরেকটু বড় হলাম এবং বুঝতে শিখলাম, আমার কল্পনার জগৎ যেন আরো বিস্তৃতি লাভ করল। সবার ক্ষেত্রেই এমন হয়।

কিন্তু এতো কিছু ভাবতে ভাবতে মুখোমুখি হতে হয় ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নির্ধারণের প্রাথমিক পরীক্ষায়। জে এস সি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পরেই সবাই চিন্তায় পড়ে যায়, কে কোন বিভাগে পড়বে? বিজ্ঞান, মানবিক নাকি ব্যবসায় শিক্ষা?  

কারণ নিজের আলাদা একটা স্বপ্ন থাকলেও বাবা মার ইচ্ছেকেই প্রাধান্য দিতে হয় বরাবর।

কিন্তু অনেক সময় এই চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত অনেকে মানতেও পারে না। যার কারণে তাদের মাঝে সৃষ্টি হয় অনিশ্চয়তা। এজন্য অনেক সময় ইচ্ছা থাকলেও অনেকেই এগোতে পারে না।

অধিকাংশ বাবা-মাই চান সন্তানকে বিজ্ঞান পড়িয়ে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বানাতে। এজন্য বিশেষ করে শহর অঞ্চলের স্কুলগুলোতে বিজ্ঞান বিভাগে পড়ুয়াদের সংখ্যাই বেশি। ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিকের পড়ুয়াদের সংখ্যা হাতেগোনা কয়েকজন।

যশোর জেলা স্কুলে এ বছর প্রভাতি শাখার নবম শ্রেণিতে ১২৫ জনের মধ্যে ১১৫ জন বিজ্ঞান বিভাগে, আট জন ব্যবসায় শিক্ষায় এবং মাত্র দুই জন মানবিকে পড়ছে।

বিষয় মূলত নির্বাচন করা হয় শিক্ষার্থী বড় হয়ে কি হবে তার সঙ্গে মিল রেখে।

এক্ষেত্রে অভিভাবকের পাশাপাশি শিক্ষার্থীর মতামতকেও দাম দেওয়া উচিত। কারণ তার স্বপ্নেরও একটা মূল্য আছে। এখানে তাকে মূল্য দিলে সে অনেক দূর যেতে পারবে।

কিন্তু অনেক সময় বাবা মা তাদের সিদ্ধান্তকে চাপিয়ে দিতে চান। সন্তানের ইচ্ছাকে মূল্যায়ন করেন না। ভেবে দেখেন না সন্তানের স্বপ্নের কথা। যা তার প্রতিভা ও মানসিক বিকাশে বাধা দেয়।

বিজ্ঞান পড়িয়ে হয়তো তারা সন্তানকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বানাতে পারবেন কিন্তু তার মতামতকে একটু গুরুত্ব দিলে হয়তো সে আরো বড় কিছু হতে পারে।

যশোরের কয়েকটি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে কথা হয় আমার। এদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা চেয়েছিল বড় হয়ে শিক্ষক হবে আবার কেউ সাংবাদিক। পরিবারের চাপে বাধ্য হয়েই তারা এখন বিজ্ঞানে পড়ে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার জন্য।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com