'আমি সাংবাদিক' এটা ভাবলেই কোথায় যেন একটা ভালো লাগা কাজ করে। সামান্য অহংকারও হয় কখনো কখনো।
কারো সাথে যখন আম্মু আব্বু পরিচয় করিয়ে দেন তখন মনে মনে খুব চাই যেন তারা বলেন,"আমার ছেলে হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের শিশু সাংবাদিক।"
হ্যালোতে সাংবাদিকতার পরীক্ষা দেওয়ার পর বন্ধুমহলে বেশ নামডাক হয়ে গেল। কিন্তু এতটুকুই। কেন জানিনা আমার একটা লেখাও ছাপানো হলো না। আমাকেও অলসতা পেয়ে বসল। আত্মবিশ্বাস কমতে শুরু করল। একসময় এমন হলো যে আমি শুধু নামেই সাংবাদিক হয়ে থাকলাম। একে আমার অতৃপ্তি, তার সাথে আম্মুর অল্প-স্বল্প বকুনি আমাকে একটু কষ্ট দিত। সেই কষ্ট আরও বেশি হয়ে উঠল এপ্রিল এর ১৯ তারিখে 'আমার কথা আমাদের কথা' বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে গিয়ে।
আমি ছিলাম ‘হ্যালো’-র বাছাই করা প্রথম সাংবাদিকদের একজন। অথচ অনেকজন আমার পরে এসেও আমার চেয়ে অনেক ভালো অবস্থানে পৌঁছে গেছে। আর আমার সাথের কয়েকজন তো রীতিমতো তারকা বনে গেছে। আমারই বয়সী, আমারই সাথের সাংবাদিকদের লেখা নিয়ে বই। কি অভাবনীয়! কী ভীষণ ভালো লাগা! আমি নিজের অবস্থান নিয়ে যখন সংকুচিত, তখন হ্যালো’র বড় ভাইয়া-আপুদের কথা শুনে শুধু অনুপ্রাণিতই হলাম না নিজের আত্মবিশ্বাসও ফিরে পেলাম। আম্মুর বকুনিকে আশীর্বাদ মনে হল।
মনে হল, আম্মুর বকুনি খেয়েও লেখা পাঠালে হয়তো আজ বইয়ে আমার লেখা খুঁজে পেতাম। আমার লেখা হয়তো জায়গা করে নিত বইয়ের কোনো না কোনো পাতায়। আব্বু-আম্মু কত খুশিই না হতেন। আমারও কত ভালো লাগতো।
আর পিছিয়ে থাকা নয়। আমি বুঝে গেছি, তলোয়ারের চেয়ে কলমের শক্তি বেশি। আমাদেরই করা প্রতিবেদন পাল্টে দিতে পারে অনেক কিছু। কত পরিবর্তন সম্ভব একটা প্রতিবেদনের মাধ্যমে। সুন্দর সমাজ, পরিচ্ছন্ন শহর, ভালো মানুষ সব, সব গড়ে তোলা সম্ভব শুধু লেখা দিয়ে। নতুন, সুন্দর, সত্যনিষ্ঠ সমাজ গড়তে আমারও যেন ছোট্ট অংশগ্রহণ থাকে সেই প্রত্যয়ে প্রত্যয়ী হলাম 'আমার কথা আমাদের কথা' বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসে।