ঢাকার কামরাঙ্গীচরের দুই শিশু মুন্না ও সিয়াম দুই ভাইও এই আনন্দ থেকে বরাবর বঞ্চিত। ওদের জীবনে কখনও আসেনি রঙিন বৈশাখ। মুন্নার বয়স ১০ বছর আর সিয়ামের বয়স ৮ মাস। মা কামরুন্নাহার 'লুছনি' বেচে তিনজনের সংসার চালান।
যখন উৎসবের রঙে রঙিন গোটা দেশ, মুন্নার বয়সী ছেলেমেয়েরা নতুন জামাকাপড় পরে বাবা-মার সাথে মেলায় ঘুরছে, শিশুদের হাতে নানা রঙের বেলুন তখন রাস্তার একপাশে মুন্নাকে দেখা গেল মায়ের বেচার জিনিসগুলো নিয়ে বসে আছে।
দোকানে বসে জিনিসপত্র বেচার পাশাপাশি সামনে শুয়ে থাকা ছোট ভাইকে পরম মমতায় বাতাস করছিল মুন্না। ওর পরনে একটি হাফহাতা ফতুয়া আর হাফপ্যান্ট। উৎসবের ছিটেফোঁটাও কোথাও দেখলাম না।
মা দূরে কোথাও হেটেঁ হেটেঁ 'লুছনি' বেচায় ব্যস্ত। বৈশাখ নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথা নাই।
একটু কাছে বসে ওর সাথে গল্প করলাম। জানতে চাইলাম, ও স্কুলে কেন যায় না?
স্কুলের কথা শুনেই ছেলেটার চোখ চকচক করে উঠলো বলে মনে হল আমার। বলল," আমার খুব ইচ্ছা। কিন্তু আমি স্কুলে গেলে ভাইকে কে দেখবে।"
আমার খুব মন খারাপ হল। সময় ছিল না বলে আমি তাড়াতাড়ি চলে এলাম। আর আসার সময় খালি মনে হল, ইস! ওরা যদি আমার মত এমন নতুন কাপড় পরে মা বাবার সাথে ঘুরতে পারতো। যদি কোনো ব্যবধানই না থাকতো ওর আর আমার মাঝে। তাহলে কত ভালো হত।