একদিন স্কুলে স্যার জিজ্ঞেস করেছিলেন, তোমরা কে কি হতে চাও? প্রায় সব বন্ধুরাই ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার কথা বলেছে। শুধু আমি একাই বলেছিলাম,''সাংবাদিক হবো।''
ছোটবেলা থেকেই আমার বাবা-মাও বলে আসছিলেন আমাকে ডাক্তার বানাবেন। আমি মনে মনে হাসতাম। কারণ আমি জানতাম যাইহোক না কেন আমি আমার লক্ষ্যে স্থির থাকব।
সাংবাদিকতা নিয়ে আমার একটা মজার গল্প আছে। দশম শ্রেণির
মডেল টেস্ট পরীক্ষার সময় ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় রচনা এসেছিল 'এইম ইন লাইফ।'
আমি যেহেতু সাংবাদিক হবো তাই আমি আমার মত লিখলাম। আমার পেছনে বসা বন্ধু বললো, দোস্ত রচনাটা একটু দেখা।
আমি জানতে চাইলাম তুই বড় হয়ে কি হতে চাস? বললো, ডাক্তার আমি বললাম, তাহলে? আমার লক্ষ্য তো সাংবাদিক হওয়া এটা লিখে কি করবি তুই? তুই তো সাংবাদিক হবি না।
আমি ছোট থেকে লেখালেখি করতে পছন্দ করতাম। কবিতা লিখতাম। বিভিন্ন রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীও হয়েছি।
যখন ক্লাস সিক্সে পড়ি তখন অন্যান্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কবিতা-ছড়া,গল্প সংগ্রহ করে একটি সাহিত্য পত্রিকা বের করতাম।
কিন্তু আব্বু এগুলো পছন্দ করতেন না। শুধু বলতেন লেখাপড়া কর, লেখাপড়া কর। তিনি পড়া ছাড়া কিচ্ছু বুঝতেন না।
একদিন ঢাকা থেকে হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের 'আমার কথা আমাদের কথা' বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে যাওয়ার নিমন্ত্রণ আসে।
ঠিক করি বই প্রকাশনী উৎসবে আব্বুকে নিয়ে যাব। দেখাবো সাংবাদিকদের।
যেই ভাবা সেই কাজ। আব্বুকে নিয়ে চলে গেলাম ঢাকায়। সেদিন হোটেল র্যাডিসানে আমার মত অনেক শিশু সাংবাদিক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী, শিক্ষা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, হ্যালো বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের নির্বাহী সম্পাদক মুজতবা হাকিম প্লেটো ও সম্পাদক অনিন্দ্য রহমানসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের পর দেখা গেল ওই বইয়ে আমার কয়েকটি লেখা ছাপানো হয়েছে। এটা দেখে আব্বু অনেক খুশি হলেন।
ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে বললেন,"তোর ইচ্ছা যেহেতু সাংবাদিক হবি, তোকে সাংবাদিকতাতেই পড়াব।"