মফস্বলের ছাত্রীর অসন্তোষ

আমার বাড়ি লালমনির হাটে। বাংলাদেশের আর দশটা গ্রামের মতই আমার গ্রামের বাড়িও সবুজে শ্যামলে ঢাকা। এখানকার মানুষ এখনও মাটির মানুষ। তবু সময়ের সাথে আমাদের মত কিশোর-কিশোরীদের জীবন অনেকটা পাল্টেছে আগের থেকে। তবে পড়ালেখায় শহরের ছেলেমেয়েদের মত সুবিধা এখনো পাই না। 

কিছু কিছু ক্ষেত্রে শহরের কিশোর-কিশোরীদের থেকে আমরা বেশ পিছিয়ে আছি। যদি শিক্ষার ক্ষেত্রে ধরি, তাহলে সরাসরি বলা যাবে না যে আমরা পিছিয়ে আছি। কারণ সরকার শিক্ষার উন্নতির জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। যেমন, সৃজনশীল পদ্ধতি চালুকরণ, নতুন বিষয়ের পাঠ্যপুস্তক সংযুক্তকরণ, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরে ক্লাস চালু প্রভৃতি পদক্ষেপগুলো নি:সন্দেহে আমাদের জন্য ভালো। তবে এগুলো নিয়েও সমস্যায় পড়তে হয় আমাদের। 

নতুন নতুন বিষয় যেমন, চারু ও কারু কলা (সংযুক্তকরণ সাল-২০১২), শারীরিক শিক্ষা (২০১২), তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (২০১৩) সংযুক্তকরণে আমাদের ভোগান্তির কথা বলি।

এ বিষয়গুলো যে আমাদের দক্ষতাবৃদ্ধি করবে তাতে লেশমাত্র সন্দেহ নেই। তবে দক্ষতাবৃদ্ধি যাদের দ্বারা করানো হবে অর্থাৎ শিক্ষকরা, তাদের কথাও ভাবতে হবে। নতুন এ বিষয়গুলো এমন যে, দক্ষ না হলে কেউ সেটা বোঝাতে পারবে না। এ ক্ষেত্রেই মূল সমস্যা। কোনো স্কুলে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক থাকলেও শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাতে সামঞ্জস্য নাই। অগত্যা বাধ্য হয়েই অন্য বিষয়-শিক্ষক, যার ঐ বিষয়ে যথেষ্ট দক্ষতা নেই তাকে তা পড়াতে হয়। অনেকটা ঢাল নেই, তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দ্দারের মত অবস্থা।

ফলে আমরা বইগুলো সাপের মন্ত্রের মত মুখস্থ করি। অনেক কিছু না বুঝেই পরীক্ষার হলে যেতে হয় আমাদের। এতে শিক্ষার্থীর ঐ বিষয়ের দক্ষতাবৃদ্ধি না হয়ে বরং  বিষয়টি  মুখস্থবিদ্যায় পরিণত হয়। আর এভাবেই আমরা ফলাফলে পিছিয়ে যাই শহরের ছাত্রছাত্রীদের থেকে। কারণ শহরের স্কুলগুলোতে অনেক দক্ষ বিষয়-শিক্ষক রয়েছেন।  

তাই আমার মনে হয়, কর্তৃপক্ষের অন্তত একটিবার হলেও গ্রামের স্কুলের শিক্ষার্থীদের কথা ভাবা দরকার। আমরাও চাই বিষয়-ভিত্তিক শিক্ষক। নতুবা আমরা আজীবন শহরের ভালো ভালো স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে পিছিয়ে থাকব।        

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com