একটি শিশু যখন রাষ্ট্রের জন্য অমূল্য সম্পদ, আর শিক্ষা যখন শিশুর অনেক অধিকারের অন্যতম একটি, তখন শিশুকে পাঠানো হয় বিদ্যাপীঠে। যদিও অনেক শিশুই এই অধিকারবঞ্চিত!
যারা শিক্ষার অধিকার অর্জন করতে পেরেছে, বিদ্যালয়গুলিতে বর্তমানে সেই ভাগ্যবান শিশুদেরও মেধা পরিমাপ করার মাপকাঠি হলো গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ (জিপিএ)। এর সর্বোচ্চ অবস্থান জিপিএ পাঁচ।
পাঁচ না পেয়ে যদি কেউ তার চেয়ে কিছু কম পায়, তাহলে পরিবার, বিদ্যালয়, সমাজের প্রায় সবখানেই সে হয় নিগৃহীত। যদিও সে এই চাহিদা মাফিক গ্রেড পয়েন্ট ছাড়া, স্কুলের বাইরে অন্য অনেক ক্ষেত্রে মেধাবী হয় তবুও।
এই অবহেলা সেই শিশুদের মানসিক বিকাশে, পরবর্তী শিক্ষাক্রমে, কতটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, তা যে কোনো মনোবিদের ভাষ্য থেকেই উঠে আসে। কারণ আমাদের কথা আমরা বললেই তো হবে না, বড়রা কী বলেন, কী ভাবেন ছোটোদের ব্যাপারে, তাদের কী মত; সেটাই বিবেচ্য!
অপর দিকে যে শিশু বা কিশোর-কিশোরী জিপিএ পাঁচ পেয়েছে, তার যেন সব কিছু পাওয়া হয়ে যায়! তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরবর্তীতে তার অন্যকিছু চাওয়ার থাকে না। আর উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সুযোগে তারাই যে এগিয়ে থাকে তাও কিন্তু সত্যি নয়। তবু এই দৌড়ে অংশ নিতেই হয়। আমরা নিরুপায়। কারণ আমরা ছোটো। আমাদের জীবন নিয়ে অন্যেরা সিদ্ধান্ত নেয়। এমনকি আমাদের মতামতের বিরুদ্ধে হলেও।
তাই শুধু এই ‘পাঁচ’-এর পেছনে ছোটা বন্ধ হোক। বন্ধ হোক জিপিএ পাঁচ না পাওয়ায়, অকাল মৃত্যু। প্রতিটি শিশু আলোকিত হোক প্রকৃত শিক্ষায়। সকলের সুবুদ্ধি ও শুভচেতনার উদয় হোক। জয় হোক সত্যিকারের বুদ্ধিদীপ্তদের। এমনও হতে পারে তারা পরীক্ষায় জিপিএ পাঁচ পায়নি!