মানলাম আমাদের দেশটা এখনও অনেক পিছিয়ে আছে। শিক্ষা, চিকিৎসা, প্রযুক্তি, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ নানাদিক থেকেই আমরা পিছিয়ে আছি।
বছরের পর বছর পশ্চিম পাকিস্তানিদের শোষণ আর নয় মাসের যুদ্ধে আমাদের অবস্থা হয়ে পড়েছিল খুবই করুণ।
স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর এসে সেই অবস্থাই কি আছে? আমরা তো এগিয়েছি। এখন ছেলে মেয়ে একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে।
আমার বিশ্বাস বাংলাদেশ আরও উন্নত হবে। এর অগ্রগতি চলমান থাকবে। একদিন আমাদের এই দেশ উন্নত দেশ হয়ে যাব।
এত অগ্রগতির পরও যারা দেশের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেন না, বরং নিজের দেশের সম্বন্ধেই আজেবাজে মন্তব্য করেন তাদের প্রতি আমার প্রচণ্ড ঘৃণা জাগে।
নিজের দেশেকে ছোট করে কথা বলা যে নিজেকে অপমান করা তা তারা বোঝেন না।
আমাদের নিয়েই তো দেশ, আমরাই তো বাংলাদেশ। তাহলে এ অপমান করা কাকে?
আমার এক আত্মীয় দেশের টাকায় বৃত্তি নিয়ে বাইরে গেছেন পড়তে।
নিজের দেশ ছেড়ে যখন তিনি প্রথম প্রথম বিদেশ গেলেন তখন বিদেশের সব কিছুই ভালো লাগতে শুরু করে। এখন বাংলাদেশ তার কাছে ‘তোদের দেশ’।
কিছুদিন আগে তিনি দেশে ফিরে আমাদের বিদেশের ছবি দেখাচ্ছিলেন। এর মধ্যে হঠাৎ আমাদের এয়ারপোর্টের ছবি ভেসে উঠল।
তখন ছবিটা দেখিয়ে তিনি বললেন, "এই দেখ, তোদের দেশের এয়ারপোর্ট!"
আমি একটুও বিস্মিত হইনি। কারণ বিদেশ যাওয়ার পর থেকে তিনি এই ধরনের কথা বলেই আসছেন!
অনেকেই আবার বলেন, "বাংলাদেশের কী আছে? বাংলাদেশের এই খারাপ ওই খারাপ! কোনো কিছুতে ডিসিপ্লিন নেই! বিদেশে যারা ইনডিসিপ্লিন তাদের দেখলেই বোঝা যায় এরা বাংলাদেশী!"
তখন আমার বলতে ইচ্ছা করে, ভাই আপনার জন্ম বুঝি আমেরিকায়? কিন্তু কিছুই বলি না, শুধু শুনি।
কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, জন্ম থেকে এখন পর্যন্ত তারা এই "বাজে" দেশের টাকা ধ্বংস করে যাচ্ছে! এই দেশের টাকায় খেয়েপরে, পড়ালেখা শিখে, এখন তারা বিদেশী হয়ে গেছেন!
এদের জন্য মাঝে মাঝে করুণা হয়। কারণ এসব কথা যারা বলেন, তারা অধিকাংশই বাংলাদেশ সম্পর্কে কিছুই জানেন না। দেশের ইতিহাস তারা সঠিকভাবে বলতে পারলেও ধারণ করতে জানেন না।
মানুষ কিভাবে এত তাড়াতাড়ি ভুলে যায় নিজের জন্মভূমিকে। আমরা ভালো কিছুই করলেই সেটা দেশের জন্য ভালো, দেশ তখন এগিয়ে যাবে। আর খারাপ কিছু করলে দেশের খারাপ, দেশ পিছিয়ে যাবে। এটা কেন তারা বোঝেন না?
কিছু মানুষ শুধু দেশের খারাপটাই দেখে। ভালো দিকটা তাদের চোখে পড়ে না।
কিন্তু আমি আমার দেশ নিয়ে আশাবাদী। একদিন আমি তাদের মুখের উপর বলতে চাই, “হ্যাঁ, তাই তো। এটাই তো আমাদের দেশ।”