​আহারে! ঝর্ণা আর পাহাড়ে

(প্রথম পর্ব) কলেজের টেস্ট পরীক্ষা শেষ হয়েছে। কিছুদিন পর আবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে। পরীক্ষা পরীক্ষা করে জীবন হাঁসফাঁস করছিল। অস্থিরতা কমাতে বন্ধুরা মিলে ঠিক করলাম দুদিনের জন্য ঘুরতে যাব কোথাও।
​আহারে! ঝর্ণা আর পাহাড়ে

যেই ভাবনা সেই কাজ। তিন বন্ধু মিলে ঠিক করলাম সীতাকুণ্ড যাব। একই সাথে উঁচু পাহাড় আর ঝর্ণা দুইই পাওয়া যাবে। ক্যালেন্ডার দেখে ডিসেম্বরের ২৩ ও ২৪ ভ্রমণের দিন ঠিক হলো।

বৃহস্পতিবার রাতেই রওনা দেব বলে স্থির করলাম। বড় দিনের ছুটি মিলিয়ে হাতে তিন দিন সময়। ভেবেছিলাম ট্রেনে যাব তবে টানা ছুটি পড়ায় আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট পাওয়া গেল না।

যদি বাসে যাই তবে ক্লান্তিতে ভ্রমণের স্বাদ পাব না। অন্যদিকে সময় যে বদলে দেব তার উপায় নেই। কারণ আমাদের তিনজনেরই কোচিং আর প্রাইভেট পড়া আছে।

শুরু হলো ইন্টারনেটে ঘাঁটাঘাঁটি। নানান খোঁজ খবর নেওয়ার পর উপায় একটা পেলাম। বৃহস্পতিবার রাতে একটা লোকাল ট্রেন আছে। উপায় না দেখে অগত্যা লোকাল ট্রেনেই যাব বলে মন স্থির করলাম। এখানে টিকিট সংকট না থাকলেও আসন সংকট রয়েছে আর ভিড়ও প্রচুর।

এরমধ্যে দেবদূত হয়ে আগমন ঘটলো ইউসুফ ভাই নামের একজন ব্যক্তির। যাকে আমরা আগে চিনতাম না। ফেইসবুকে সাহায্য চাওয়ার পর তিনি জানালেন তিনি আমাদের জন্য সিটের ব্যবস্থা করে রাখার চেষ্টা করবেন। আর আমরা যেন একটু আগে আগেই স্টেশনে পৌঁছে যাই। আমি আর আমার এক বন্ধু তার আচরণ দেখে বেশ অবাকই হলাম! যেচে উপকার করতে চাইছে কেন? মনে মনে বেশ খটকা লাগল।

মানুষ আবার এমন হয়! কোনো স্বার্থ ছাড়া সে কেন আমাদের উপকার করবে? আমরা দুই বন্ধু বেশ সংশয়গ্রস্ত হয়ে পড়লাম। তখন আমার আরেক বন্ধু তার এক অভিজ্ঞতার কথা শোনালো কিভাবে সে অপরিচিত একটা মানুষের কাছ থেকে কোন কারণ ছাড়াই সাহায্য পেয়েছিল। সেই গল্প হ্যালোতে আরেকদিন বলব। এখন বরং ভ্রমণ কাহিনীটা বলি।
 

ট্রেন যেহেতু রাত ৯.৪০ মিনিটে তাই রাত ৮ টার দিকেই আমরা তিন বন্ধু একত্রিত হলাম। আমার দুই বন্ধুর নামই তো এখনো বলিনি। আমার বাকি দুই বন্ধুর নাম সাজ্জাদ আর শোভন। আমরা যখন স্টেশনে পৌঁছলাম তখন ঘড়ির কাটা রাত ৯.৩০ ছুঁই ছুঁই করছিল। স্টেশনে পৌঁছা মাত্রই ট্রেন চলে আসল।

একটা বিষয় বলে রাখা দরকার ইউসুফ ভাই কিন্তু আমাদের আগেই স্টেশন পৌঁছে গিয়েছিলেন। দৌড়ে ট্রেন ঠিক মতো থামার আগেই বাকিদের সাথে আমরাও ট্রেনের ওঠার জন্য যুদ্ধ শুরু করলাম। উঠেই দেখি বগির সব আসন দখল। আমাদের তিন বন্ধুর মাথায় হাত। আর যাই হোক সারা রাত ট্রেনে দাঁড়িয়ে যাওয়া সম্ভব না। যাত্রা মনে হয় এখানেই শেষ হল! (চলবে..)
 

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com