সরকার আমাদের স্বপ্ন দেখায়। সরকার মহোদয় বলেন সেদিন বেশি দূরে নয় যেদিন আমরা উন্নয়নশীল দেশ না লিখে উন্নত দেশ লিখব। অথচ সেই উন্নয়নের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আমাদের দেখতে হয় মেধাবী ছাত্র টাকার অভাবে পরীক্ষা দিতে পারেছে না। সে মসজিদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে পরীক্ষার ফরম পূরণের টাকা ভিক্ষে করছে।
হায়রে কী অভাগা আমরা। যে ছেলেটি দেশের উন্নয়নের হাল ধরবে সে কিনা পরীক্ষায় বসতে পারছে না।
গত শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর ছেলেটি তার বৃদ্ধ নানিকে সাথে নিয়ে ফরম পূরণের টাকা তুলছে। বিষয়টি আমার বন্ধু রাতুলের চোখে পড়ে। সাথে সাথে সে আমাকে ফোন করে জানায়। আমি তাকে সাহায্য করার আশ্বাস দিয়ে এভাবে টাকা সংগ্রহ বন্ধ করতে বলি।
আমরা বন্ধুরা মিলে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছি। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সাহায্যের জন্য আমরা এই সংগঠন পরিচালনা করি। আমি সঙ্গে সঙ্গে অন্যদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করি। আমরা সিদ্ধান্ত নেই যে করেই হোক ওকে পরীক্ষা দিতে সাহায্য করব।
ছেলেটির সঙ্গে কথাবলে জানলাম ওর পরিবারের অন্য আত্মীয়রা চান ওকে গ্যারেজের কাজে দিতে। কিন্তু তার মায়ের স্বপ্ন ছেলেটি একজন ভালো মানুষ হবে। আমরাও তাই মনে করি। আর তাই ৯ তারিখ সকালে ফরম পূরণের আড়াই হাজার টাকা তুলে দেই ছেলেটির মায়ের হাতে।
এমন হাজারও তাসনিম আমার আপনার চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। চক্ষুলজ্জায় অনেকে কাউকে বলতে পারে না তাদের সমস্যার কথা। কিন্তু আমরা কি করে চুপ থাকতে পারি? আমরা কি এতটাই গরিব যে সামান্য কটা টাকার জন্য এমন মেধাকে হারিয়ে ফেলব? না যত দিন পারি এভাবে কুড়িয়ে নেব মেধা। নিজের জন্য, দেশের জন্য। হারাতে দেব না একটি স্বপ্নও।