ওই শিশুগুলোকে আমার খুব ভালো লাগে। কী দারুণ সারল্য চোখে মুখে। এত না পাওয়ার মাঝেও ওরা হাসি মুখে কথা বলে।
আমি অবাক হয়ে ওদের কথা শুনি। মন খারাপ থাকলে মন ভালো হয়ে যায়।
সেদিন হুমায়ুন, মুস্তাকিন ও কাঞ্চন নামের তিন শিশুর সঙ্গে কথা হয়।
হুমায়ুন আর মুস্তাকিন দুই ভাই, কাঞ্চন তাদের প্রতিবেশী। হুমায়ুনের বয়স ১২ আর মুস্তাকিনের নয়। আর কাঞ্চন ওদের ছোট। ওর বয়স সাত।
কাঞ্চনের গ্রামের বাড়ি নীলফামারী। ঢাকায় স্টেশনের পাশেই ভাই, দাদি আর বাবার সঙ্গে সংসার ওর।
কাঞ্চন মায়ের সঙ্গে গ্রামেই থাকে। তবে ঈদ উপলক্ষে বাবার কাছে ঘুরতে এসেছে।
ও প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। তার কাছে গ্রাম ও ঢাকা দুইটাই ভালো লাগে। ও বড় হয়ে পুলিশ অফিসার হতে চায়।
হুমায়ুন আর মুস্তাকিনের পরিবারে তারা দুই ভাই ছাড়াও আরও দুটি বোন ও বাবা মা আছে। তাদের বাসাও স্টেশনের পাশেই।
ওরা দুজন স্টেশনের পাশে কলার আড়তে কাজ করে। ভোরবেলা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কাজ চলে তার।
তাদের কাজ হলো পড়ে যাওয়া কলা টোকানো। তারা জানায় কাজ ঠিক মতো না করলে কলার আড়তের লোকেরা তাদের বকা দেয়। ওরা দুজন মিলে দিনে একশ টাকা আয় করে।
ওরা সকালে বাইরে নাস্তা খায়। আর দুপুরে ও রাতে বাসায় ভাত খায়।
পরিবারের সবার ছোট ছেলে মুস্তাকিন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়লেও সবার বড় হুমায়ুন স্কুলে যায় না।
হুমায়ুন বলে, "আমাকে তো স্কুলে ভর্তি করে নাই। তাই পড়ি না।
তবে সুযোগ পেলে ও পড়াশোনা করতে চায়। হুমায়ুন বড় হয়ে বিদেশ যেতে চায়। অনেক টাকা আয় করতে যায় যাতে বাবা মাকে কখনও না খেয়ে থাকতে হয়।