আমার বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালিতে। দূরত্ব আর যানজটের বিষয় বিবেচনা করে এবারের ঈদে ঢাকায় থাকার করা কথা ছিল। কিন্তু ঈদের আগের দিন বিকালে হুট করে সিদ্ধান্ত হলো ঈদ হবে এবার নানুর বাড়িতে। গতবারও তাই হয়েছিল। যাইহোক তাড়াতাড়ি তৈরি হলাম। সন্ধ্যায় বাসার কাছের কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে রওনা হলাম নরসিংদী।
ঈদের দিন বাড়িতেই ছিলাম। তবে পরদিন থেকে ঘুরেছি অনেক। নরসিংদীর রায়পুরা থানার একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র পান্থশালায় গিয়েছিলাম। আমার সাথে শামিম ভাইয়া, ছোট ভাই শেখ মখদুম, আসিফ মামাসহ ১৮ জন ছিল।
পান্থশালায় যাবার জন্যে ভাড়া করেছিলাম তিন চাকার অটো রিকশা। বিকেলের দিকে দীর্ঘ পথ পেরিয়ে ওই বিনোদন কেন্দ্রে পৌঁছাই। পান্থশালায় যেতে পাড়ি দিতে হয় রায়পুরা ব্রিজ।
বিনোদন কেন্দ্রের পাশেই রায়পুরা ফেরীঘাট। পান্থশালার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে মেঘনা নদী। বিকেলে সব বয়সীরা ভিড় করে এখানে। ওই বিনোদন কেন্দ্রে শিশুদের জন্যে দোলনা ছাড়াও কয়েক ধরণের রাইডের ব্যবস্থা রয়েছে।
সারি সারি নৌকা রাখা থাকে পান্থশালা নৌকাঘাটে। আসলে ওই জায়গা থেকে মানুষ নৌকায় করে বাঁশগাড়ী, পাড়াতলি কিংবা গোবিনাথপুরে যায়।
সবার কাছে হঠাৎ জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পেছনে মূল কারণ হচ্ছে পান্থশালার নৌকা ভ্রমণ আর অপরূপ প্রাকৃতিক পরিবেশ। এমন পর্যটন এলাকায়, নৌকা ভ্রমণের সুযোগ আছে বলে বেশিরভাগ মানুষ নৌকা ভ্রমণে যায়।
নৌকা ভ্রমণে গিয়েছিলাম আমরাও। নৌকা ভ্রমণে যাবার আগে, পান্থশালায় অনেকক্ষণ ঘুরে দেখেছিলাম। পান্থশালায় না এলে, এই জায়গার পড়ন্ত বিকালের সুন্দর পরিবেশ লিখে বোঝানো যাবে না।
পান্থশালা ঘোরাঘুরি পর নৌকা করে আমরা গিয়েছিলাম গোবিনাথপুর গ্রামে। নৌকাতেই আমরা বিকালের নাস্তা করেছিলাম। প্রকৃতি দেখতে দেখতে সবার সাথে আড্ডাটা ভালই জমে ছিল।
আমি বারবার অবাক হয়ে দেখছিলাম সৃষ্টির অপরূপ সৌন্দর্য। আগেও কয়েকবার নৌকা ভ্রমণে গিয়েছি। কিন্তু এত সুন্দর প্রকৃতি দেখার সুযোগ আমি পাইনি। বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যার প্রায় আধ ঘণ্টা আগে নৌকা গোবিনাথপুরে পৌঁছল।
আমরা গোবিনাথপুর নেমে কিছুক্ষণ জায়গাটা ঘুরে আবার রওনা দিলাম নৌকাঘাট অর্থাৎ পান্থশালায়। সেদিন কিভাবে যেন বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেল টেরও পেলাম না। তবে সন্ধ্যায় সূর্য ডোবার বিষয়টা আমি অনেক উপভোগ করেছিলাম।
তবে দেখলাম সবাই খাওয়ার পর নদীতেই চিপস, জুস আর নানান বর্জ্য ফেলছে। আমি কয়েকজনকে বারণ করেছিলাম। কিন্তু কেউ কানে তুলল বলে মনে হলো না।