ফেইসবুকে পশু জবাইয়ের ছবি দেবেন না, প্লিজ

একজন মুসলমান হিসাবে আমি পশু কোরবানির বিপক্ষে নই। এই উৎসবে সপরিবারে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি ঈদের আনন্দ সবার সাথে ভাগ করে নিতে। কিন্তু ট্রেনে বসে ফেইসবুক খুলে গত ঈদের পশু জবাইয়ের রক্তাক্ত ছবি দেখে অনুরোধটা পৌঁছে দিতে লিখতে বসলাম।

জবাইয়ের রক্তাক্ত দৃশ্য দেখে আমি শিউরে উঠছি। তাই অনুরোধ জানাচ্ছি, এরকম বীভৎস ছবি পোস্ট করবেন না, প্লিজ। আমার অনুরোধ অনায়াসেই অগ্রাহ্য করতে পারেন। আর যদি মনে কষ্ট পান, ক্ষমা করবেন। কিন্তু সঠিক মনে হলে অনুরোধটি রাখতে পারেন।

মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা দোর গোড়ায়। রাত পোহালেই ঈদ। উৎসবে পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে নিজের ভেতরের কলুষতাকে বলি দেওয়া ইসলামের শিক্ষা। ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে এই উৎসবে তারা নিজের প্রিয় পোষা প্রাণি স্রষ্টার উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন। সেই প্রাণির মাংস আত্মীয়-স্বজন, গরিব-দু:খীর সাথে ভাগ করে খান।

কিন্তু নাগরিক জীবনে পোষা প্রাণির বদলে ঈদের আগে কেনা পশু দিয়েই এ কাজ সারতে হয়। এই পশু কেনা আর জবাইয়ের দৃশ্য ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে সবখানে।

সেই সাথে বিনীতভাবে আরেকটি অনুরোধ জানাই, কোন শিশু-কিশোরকে দিয়ে কোরবানির পশু জবাই করাবেন না। হোক সে মাদ্রাসার হাফেজ কিংবা এতিম। কারণ শিশুর মন খুব নরম। তার বেড়ে ওঠার সময় যে কোনো ঘটনাই খুব গুরুত্বপূর্ণ। এসব ঘটনাই তার পরবর্তী জীবনে প্রভাব ফেলে।  

একটু ভেবে দেখুন, একজন কিশোর যদি এই বয়স থেকেই এ কাজ করতে অভ্যস্থ হয়ে পড়ে, এক পর্যায়ে যে কোনো হত্যাকেই তার স্বাভাবিক মনে হতে পারে। তার সুকুমারবৃত্তিগুলো কৈশোরেই ভাঁটা পড়ে যেতে পারে। পরে সে অন্য কোনো অপরাধে জড়িয়ে পড়বে না, এ কথা আমরা জোর দিয়ে বলতে পারি না।  

মনোবিদ রাউফুন নাহার এ সম্পর্কে বলেন, 'এরকম সহিংস দৃশ্য শিশুর মনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। শিশুর মাধ্যমে বা তার উপস্থিতিতে পশু কোরবানি করলে তার শিশু মনের কোমলতা বা সংবেদনশীলতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

'এতে করে শিশুর ভেতরে একদিকে যেমন ভয় বা ট্রমা কাজ করতে পারে আবার অন্যদিকে আচরণে নিষ্ঠুরতা চলে আসতে পারে।'

দুবছর আগে হ্যালোতে আমার বন্ধু পৃথার একটা লেখায় পড়েছিলাম, তার ছোট বোন বাড়ির পাশে এরকম জবাইয়ের দৃশ্য দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। ঘুমের মধ্যে দু:স্বপ্ন দেখে বারবার কেঁদে উঠছিলো।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com