বাঁচব, নিরাপত্তা দাও

বেঁচে থাকার অধিকার, মানুষের প্রথম ও শ্রেষ্ঠ অধিকার।

এ অধিকার শুধুমাত্র বাংলাদেশের মানুষের নয়, এ অধিকার পুরো বিশ্বের সব মানুষের। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বে সংঘটিত একের পর এক হামলা ধ্বংস করছে সাধারণ মানুষের এ অধিকারকে।

বিশ্বের কোনো মানুষের জীবনের আজ নিশ্চয়তা নেই; নেই শান্তি। শিশু, নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ কেউই আজ নির্বিঘ্নে, নির্ভয়ে বাস করতে পারছেন না। প্রায় সব দেশেই সবাইকেই বোমা হামলা ও সন্ত্রাসী আক্রমণের ভয় নিয়ে বাঁচতে হচ্ছে।    

সম্প্রতি বিশ্বের নানা জায়গায় আক্রান্ত হচ্ছেন, হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানসহ সব ধর্মের মানুষ।  

পহেলা জুলাই ঢাকার গুলশানে আক্রমণ করে জঙ্গিরা। রাত পৌনে ন’টার দিকে একদল জঙ্গি সশস্ত্র আক্রমণ চালায় হলি আর্টিজান বেকারি নামের একটি রেঁস্তোরায়। এতে নিহত হন তিন জন বাংলাদেশি, একজন ভারতীয়, সাত জন জাপানি ও ন'জন ইতালীয়।

এ হামলায় স্তম্ভিত হয়ে পড়ে পুরো বিশ্ব। দেশে পালিত হয় তিন দিনের জাতীয় শোক।

শোক কাটতে না কাটতেই ১৭ জুলাই আবার সন্ত্রাসী হামলা হয় ফ্রান্সের নিসেতে। ঘটনাটি ঘটে ফ্রান্সের জাতীয় উৎসবের দিনে। এতে নিহত হয় শিশুসহ ৮৪ জন।

এরপরও থেমে থাকেনি সন্ত্রাসী হামলা। পরপর আরও দুটি হামলা ঘটে জার্মানির মিউনিখের একটি শপিংমলে ও আফগানিস্তানের কাবুলে।   

২২ জুলাই রাত ৯টার দিকে এক কিশোর হামলা চালায় মিউনিখের একটি শপিং মলে। এ ঘটনায় নিহত হয় ন'জন যার মধ্যে সাত জনই কিশোর।

অপরদিকে কাবুলে সন্ত্রাসী আক্রমণ ঘটে ২৩ জুলাই। এ আক্রমণে ৮০ জন মানুষ নিহত ও দুশো ৩১ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এই সংবাদ লিখতে লিখতেই গণমাধ্যম থেকে জানতে পারলাম, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় একটি নাইট ক্লাবে গুলিতে দুইজন নিহত এবং অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন। রোববার ঠিক মাঝরাতের পরপরই ফ্লোরিডার ফোর্ট মায়ার্সের ওই নাইট ক্লাবে এ হামলার ঘটনা ঘটে।  

এ ঘটনার মাত্র ছয় সপ্তাহ আগেই ফ্লোরিডারই অরল্যান্ডোতে এক বন্দুকধারী একটি নাইটক্লাবে হামলা চালিয়ে ৪৯ জনকে হত্যা করে।

বিশ্বজুড়ে এভাবেই ঘটে চলছে সহিংস কর্মকাণ্ড। নিষ্পাপ শিশুরাও হতাহত হচ্ছে। দেখছে, শুনছে পৃথিবীর এসব ভয়ংকর চিত্র। তাদের মধ্যে কাজ করছে ভীতি ও আতঙ্ক।

আমার নিজের মধ্যেও এখন ভয় ও আতঙ্ক কাজ করছে। গুলশান হামলার পর থেকে কোনো রেস্টুরেন্টে যাওয়ার সাহস পাচ্ছি না। কারণ যে রেস্টুরেন্টে যাব সেখানে যদি বোমা বা সন্ত্রাসী হামলা হয়?

মানুষের মন থেকে বিশেষ করে শিশুদের মনে এই ভয় ও আতঙ্ক  দূর করার জন্য পৃথিবীর সব জায়গায় এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অবসান ঘটুক। আমরা নিরাপদ পৃথিবীতে বাঁচতে চাই। 

কে এবং কারা আমার এবং আমাদের মতো শিশুদের এই আর্তি শুনবেন? আমরা বাঁচতে চাই, চাই নিরাপদ পৃথিবী।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com