ঘর ও পথে নির্যাতনের শিকার শিশু

শিশুদের প্রতি সহিংসতার হার আমাদের দেশে দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। শারীরিক ও মানসিকভাবে শিশুরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।

নিজেদের চারপাশে তাকালে বা গণমাধ্যমগুলোতে চোখ রাখলে নির্যাতনের স্পষ্ট চিত্র দেখা যায়। প্রায়ই সংবাদ পত্রগুলোর একটা বড় অংশ জুড়ে ছাপা হতে দেখি শিশুদের প্রতি নির্যাতনের সংবাদ।

কখনও স্কুলের শিক্ষকের কাছে, শ্রমজীবী শিশুরা মালিকের হাতে, কখনও বাবা মায়ের হাতেও নির্যাতনের শিকার হয় শিশুরা।

হ্যালোতে কাজ করার সুবাদে অনেক শিশুর সাক্ষাতকার নিয়েছি। এদের অনেকেই নানা জনের কাছ থেকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে। খুব কাছ থেকে শুনেছি তাদের গল্প।

এক শিশুর মুখে শুনেছিলাম, কুড়িয়ে পাওয়া একটি মোবাইল কম দামে বেচায় ওর পায়ে ধারাল বটি দিয়ে কোপ দিয়েছিলেন মা। খোকা নামের শিশুটির বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর।

এরপর একদিন এয়ারপোর্ট এলাকায় কথা হয় কুদ্দুস নামের আরেক শিশুর সঙ্গে। ওর মা বাবা নেই। এয়ারপোর্ট স্টেশনে অন্য টোকাইদের সঙ্গে ওর বসবাস।

ও বলেছিল, অনেকেই ওদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। স্টেশনের পুলিশদের ফরমায়েশ খাটতে হয় ওদের। তবে কাজ না করলেই জোটে নির্যাতন।

চন্দ্রিমায় ঘুরতে গিয়ে কথা হয়েছিল হাফসা নামের এক শিশুর সঙ্গে। অন্যের ঘরে টেলিভিশনে কার্টুন দেখতে যেয়ে নির্যাতনের শিকার হতে হয় ছোট শিশু হাফসাকে। গায়ে জল ঢেলে দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেয় ওকে। একে শুধু শাররিক নির্যাতন বললে ভুল হবে, এটা মানসিক নির্যাতনও বটে।

এটা তো গেল ছিন্নমূল শিশুদের কথা। সচ্ছল পরিবারের শিশুরা প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হচ্ছে ঘরে। মা বাবার অধিক প্রত্যাশা তাদের উপর চাপ তৈরি করে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে শিশুদের উপর চাপিয়ে দেওয়া সবচেয়ে বড় নির্যাতনের নাম পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের প্রত্যাশা। এটা বলতে গেলে শিশুদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়।

এই শিশুরা সারাদিন স্কুল করার পর কোচিং আর স্যারদের পেছনে ছোটে। এসবের মাঝে খেলাধুলা করা বা কিছুটা সময় অন্য কিছু করা বা বিশ্রাম নেয়ার সময় হয়তো খুব কম শিশুই পায়। এটা নির্যাতন নয় কি? অবশ্যই নির্যাতন। আর এই নির্যাতনের ফলে শিশুরা বঞ্চিত হচ্ছে বর্ণিল শৈশব থেকে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com