দেখে দাঁড়িয়ে গেলাম। আমার মতো অনেকেই দাঁড়িয়ে আছে ওদের পাশে। ওদের বয়স বোধহয় ছয় থেকে সাত এর বেশি হবে না। কি আগ্রহ তাদের পড়াশোনায়!
একটু এগিয়ে তাদের পাশে বসলাম। শুরুতেই তাদের নাম জানতে চাইলাম। একজনের নাম আকলিমা আরেক জনের মিতু।
ওদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম বাড়িতে খুব হৈচৈ বলে পড়া হয় না। তাই পথের পাশে বসে পড়ালেখা করছে। এছাড়া ওদের টিনের বাড়ি। তাই গরম খুব বেশি। বাইরে বসে পড়লে বাতাস লাগে গায়ে।
আকলিমা ইংরেজি বর্ণগুলো পড়ছে, মিতু বইয়েই ইংরেজি লিখছে।
বইয়ে লিখছে কেন জানতে চাইলে মিতু বলে, আমার লেখার খাতা নেই। তাই বইয়েই লিখি।
সঙ্গে সঙ্গে আকলিমা বলে ওঠে, "আমারও নেই।"
খাতা দেব বলে ওদেরকে আমাদের বাসায় নিয়ে যাই। আমার দুইটা খাতা ওদের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললাম, আজ থেকে খাতায় লিখবে, বইয়ে আর না।
খাতা দুইটি হাতে পেয়ে ওরা হেসে উঠল। হাসি দেখে আমার মন ভরে গেল। ওদের চোখে মুখে যে খুশির ঝলকানি দেখেছি তা আমার মনে দাগ কেটে গেছে।
এমন হাজারো আকলিমা-মিতু পড়ে আছে। এরা স্বপ্ন দেখে বড় হওয়ার। তবে দারিদ্র্য তাদের এই স্বপ্নকে বিকশিত হতে দেয় না। দরিদ্রতার কষাঘাতে অনেক শিশুর মতো হয়তো ওদের লেখাপড়ার স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে। সেই স্বপ্ন হারিয়ে যাবে অন্যের বাড়িতে থালা-বাসন ধোয়ার মধ্য দিয়ে।