কোথায় যাব ভাবতেই রমনা পার্কের কথা মাথায় এলো। আমি আগে কখনও রমনায় যাইনি। পরিকল্পনা ঠিক করলেও আজ যাই কাল যাই করে যাওয়া হচ্ছিল না।
গত সপ্তাহের বুধবারের কথা। এক বন্ধুর ফোনে শুনলাম হঠাৎ ঝড়ে রমনার প্রাচীন মহুয়া গাছটি ভেঙে পড়েছে। আমি কখনও মহুয়া গাছ দেখিনি। তাই ভাবলাম যাই ঘুরেই আসি। পরদিন সকালেই বের হলাম রমনার উদ্দেশ্যে।
রমনায় প্রবেশ করলাম কাকরাইলের গেট দিয়ে। পার্কে ঢুকেই মনে হল, অনেক দিন পর আমি শ্বাস নিচ্ছি। বারবার বুক ভরে নিঃশ্বাস নিচ্ছিলাম।
ঘুরে ঘুরে অনেক গাছ দেখলেও তেমন কোনো গাছই চিনতে পারলাম না। কিছু কিছু গাছের গায়ে নাম লেখা থাকলেও বেশির ভাগ গাছের গায়েই নামফলক লাগানো নেই।
হেঁটে হেঁটে চলে গেলাম রমনার ভেঙে যাওয়া মহুয়া গাছটির তলে। সেখানে মানুষের বেশ জটলাও দেখলাম।
পার্কে ‘এক নজরে রমনা পার্ক’ শিরোনামে একটি সাইনবোর্ডে পার্ক সম্পর্কে বিস্তর লেখা আছে। সেখান থেকেই জানলাম রমনা পার্ক ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই পার্কটির আয়তন ৬৮.৫০ একর।
২০০৫ সালের জুলাইয়ে পার্কটির গাছ নিয়ে একটি পরিসংখ্যান করা হয়। এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখানে ২১১টি উদ্ভিদ রয়েছে। এর মধ্যে ফুল ও শোভাবর্ধনকারী গাছ রয়েছে ৮৭টি, ফল জাতীয় গাছ রয়েছে ৩৬টি, ঔষধি ৩৩টি, বনজ ৪৭টি ও মসলা জাতীয় তিনটি গাছ ছাড়াও ছয়টি ভিন্ন জাতের গাছ রয়েছে।
এতো ঘুরে আমি ক্লান্ত হয়ে গেলাম। রমনার গ্রিন রেস্টুরেন্টে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে খাওয়া-দাওয়া সারলাম। এরপর আবার বেরিয়ে পড়লাম রমনার বাকি অংশ দেখতে।
অনেক ঘোরাঘুরির পর ঘড়ির দিকে তাকাতেই চমকে গেলাম। দুপর হতে চলেছে। বাড়ির পথে পা বাড়াতে হবে। এক বুক তাজা বাতাস নিয়ে ফিরে চললাম আমার চিরচেনা ঘরে যেখানে মা আমার অপেক্ষায় আছেন।