নদী ভাঙনে বিপন্ন জীবন

কিছুদিন আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে  রিকশার জন্য অপেক্ষা করছিলাম। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে শেষমেশ রিকশা পেয়েছিলাম। সঙ্গে পেয়েছি এক বুক কষ্ট।

যে রিকশা পেলাম তার চালকের বয়স হবে ৬০-৬৫ বছর।৭০ বছরও হতে পারে। এরকম বয়সী একজন মানুষ দেখে আমি আর ভাড়া ঠিক করলাম না। ভাবলাম পাঁচ দশ টাকা বেশি চাইলে দিয়ে দেব।

কিছু দূর যাওয়ার পর দেখলাম তার রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। উঁচু জায়গাগুলো আসলেই আমি নেমে উনাকে রিকশা ঠেলে তুলতে সাহায্য করছিলাম।  

হঠাৎ মনে হল উনার সঙ্গে কথা বলি। শুরুতেই নাম জিজ্ঞেস করলাম। তিনি জানালেন তার নাম মাহমুদুল হক।

গল্প করতে করতে জানতে পারি তার তিন ছেলে মেয়ে। তবে সবাই ছোট। বড় ছেলে মাত্র নবম শ্রেণিতে পড়ে আর ছোট মেয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে। মেজো মেয়ে পোশাক কারখানায় কাজ করে। 

দিনে দুই থেকে আড়াইশো টাকা রোজগার করেন তিনি। খুব কষ্টে চলে তার সংসার।

উনার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর হাতিয়ায়। নদীর পাড়েই। জমিজমার কোনো অভাব ছিল না। এক বছরের ধানে অন্য বছর পর্যন্ত চলে যেত। তবে নদীর ভাঙনে সব গেছে। বাধ্য হয়ে চালাতে হচ্ছে রিকশা। ছেলেমেয়ের পড়ানোর খরচ জোগাড় করতেই তিনি এতো কষ্ট করছেন বলে জানান।  

শুনেছি নদীর একপাড় ভেঙে নাকি অন্য পাড় গড়ে উঠে। এবাবে উনারমত অনেক মানুষ আছেন আমাদের দেশে যারা নদী ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে আজ রাস্তায় নেমেছেন।

খুব কষ্ট হল উনাকে দেখে। যার এই বয়সে আরাম আয়েশ করার কথা তিনি পরিশ্রম করছেন ছেলেমেয়ের জন্য। এই ছেলে মেয়েরা কি সে কথা মনে রাখবে? এরকম মানুষের কথা কেউ কি ভাবে না?

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com