কৌতূহল হল। একটু এগিয়ে দেখতে গেলাম। যা দেখলাম তাতে আমি অবাক হলাম। কলা গাছের শহীদ মিনারে একটি বেদীর মতো বানানো আছে। সে জায়গাতে ফুল দেওয়া হয়েছে। পাশ দিয়ে টানানো হয়েছে কয়েকটা কাগজের পতাকা।
ওদের একজনের নাম সিয়াম এবং অন্য জনের নাম নাহিদ। সিয়াম স্থানীয় একটি প্রথম শ্রেণির ছাত্র। নাহিদ একই স্কুলের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে।
খুব ইচ্ছা ছিল ওদের শহীদ মিনারে ফুল দিবে। কিন্তু স্কুলে কোনো শহীদ মিনার না থাকায় তাদের ইচ্ছে পূরণ হয়নি।
শুধু তাদের স্কুলে নয়, তাদের গ্রামের আশেপাশে কোনো স্কুল, কলেজে শহীদ মিনার নেই।
গ্রাম থেকে একটু দূরে একটু স্কুলে একটি শহীদ মিনার আছে। তবে সেটিও ভেঙে গেছে।
কিন্তু শহীদ মিনার নেই বলে কী শ্রদ্ধা জানানো হবে না? তা ঠিক নয়। তাই দুইজন কলার গাছের বাকল কেটে তা দিয়ে তৈরি করেছে ছোট্ট একটি শহীদ মিনার।
এরপর খালি পায়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে ভাষা শহীদদের প্রতি। ছোট শিশু দুটির কাজ দেখে আমি অবাক হয়ে যাই। এতো ছোট দুজন শিশুর ভাষার প্রতি ভালোবাসা আমাকে আবার নতুন করে ভাবাচ্ছে।
অথচ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের এক খবরে পড়লাম বিএনপির নেতাকর্মীরা জুতা পড়ে শহীদ মিনারে উঠে গেছে। সত্যি মাঝে মাঝে দুঃখ হয় এই অবুঝদের জন্য যারা নিজের ইতিহাসকে অশ্রদ্ধা করে।
যাইহোক এখন আমার ভাবতে ভালো লাগছে ৫২ এর সেই রক্ত দেওয়া শহীদেরা সিয়াম, নাহিদের মধ্যে দিয়ে বাংলার ঘরে ঘরে জন্ম নিচ্ছে। যাদের হাত ধরে এক সময় দেশ আরও এগিয়ে যাবে। তবে এই শিশুদের বড় করে তুলতে হবে সঠিক পথে। এজন্য চাই উপযুক্ত পরিবেশ ও শিক্ষা ব্যবস্থা।